Social Icons

t

Featured Posts

i

Sunday, June 24, 2018

দাম্পত্য : কুররতা আইয়ুন (পার্ট ১)

ভূমিকা:
কোন ভূমিকা ছাড়া শুরু করা যাচ্ছে না বলে দুঃখিত। এই লেখা শুধুমাত্র যারা আল্লাহর বিধান অনুযায়ী পারিবারিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে জীবনকে সাজাতে চান তাদের জন্য। সেকুলারিস্ট/ফেমিনিস্ট/ওয়েস্টার্ন ইসলামিস্টগণ অহেতুক পড়ে পছন্দ হবে না। খামোখা হবে ব্যাপারটা।
ক.
এখানে সবকিছুই সুন্নাহ সাব্যস্ত নয়। কিছু আছে দলিলসাব্যস্ত, কিছু আছে আলিমগণের নিরীক্ষিত কওল, কিছু আছে কমনসেন্স ও আদব। যদি খটকা লাগে ফিকহীভাবে আস্থাভাজন আলিমের তাহকীক ও পরামর্শ নিবেন। কিতাব যথেষ্ট নহে। কিতাবের সাথে রিজাল যুক্ত হলেই ইলম পূর্ণতা পায়।
খ.
পাঠ্যপুস্তকে আমাদের শুধু ভাল কেরানী, পুঁজিবাদের ভাল সেবক হওয়া শেখায়। যেন জীবনে চাকরগিরির ক্যারিয়ারই সব। টাকা কামানোই একমাত্র উদ্দেশ্য।  বেশি বেশি বস্তু কেনাই কামিয়াবি। ভেবে দেখেন চাকরি যেমন একটা মেজর ইভেন্ট আমাদের জীবনে, বিয়েও কি একটা মেজর ইভেন্ট না? সন্তান জন্ম ও পালনও কিএকটা মেজর টাস্ক নয়? তাহলে আমাদের প্রচলিত শিক্ষা যদি ভবিষ্যত জীবনের জন্য আমাদের গড়ে তোলারই দাবি করে, তবে ভালো চাকুরের সাথে ভালো স্বামী/ভালো বাবা/ ভালো সন্তান হবার সিলেবাস কোথায়? তার মানে ওরা আপনার সুন্দর জীবন চায় না, চায় শুধু আপনার সু্ন্দর সার্ভিসটুকু। ষাট বছর হলে ছিবড়ে ফেলে দেবে ছুঁড়ে, ব্যস। দে ডু নট বদার যে আপনার ছেলে মানুষ হল কি না। আপনার ডিভোর্সে  ওদের কিসসু আসে যায় না। আপনি আপনার বৃদ্ধা মা-কে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠালেও ওরা দেখবেনা। আপনার কাজ নেবার জন্যই এত আয়োজন, এতকিছু। এই নোট সিরিজটা আমাদের সিলেবাসের সেই অসূ্র্যম্পশ্যা অংশটুকু নিয়েই যেগুলো কখনও আলোর মুখ দেখেনি।
গ.
ফিকহী বা দীনী যেটুকু শিখেছি পেয়েছি, আপনাদের খিদমতে আরজ করলাম। কারো উপকারে এলে আল্লাহ বান্দাকে সাদাকায়ে জারিয়ার বদলা দিবেন এই আশায় লিখে দিলেম। অভিজ্ঞতালব্ধ ও দীনী ও আদবগত জিনিসগুলোকে মেডিকেল সাইন্সে গুলিয়ে আপনাদের জন্য শরবত বানালাম। মন্দ লাগলে উলামা হযরতগণ তো আছেনই আমাদের সংশোধনে। আলহামদুলিল্লাহ।
ঘ.
কিছু জায়গায় ‘ভালগার’ কথা আসতে পারে। মাফ চাই। বোনদের পড়ার দরকার নেই। অতিরিক্ত কৌতূহল ভাল না কিন্তু। আপনাদের জন্যও লেখবানে। সবর।

লাড্ডু খাওয়ার আগে:
ক. চেষ্টা শুরু করুন আগেই:
অনেকেই আমরা বিয়েকে গুনাহমুক্তির উপায় মনে করি। ভাবি, এক'দিন যেমন চলছে চলুক, বিয়ে করে একদম দরবেশ হয়ে যাব। তা তো বটেই। নতুন করে গুনাহের সম্ভাবনা বিয়ে কমিয়ে দেয় বহুলাংশে। তবে পূর্ব থেকেই আপনি যে গুনাহগুলোতে অভ্যস্ত সেগুলো বিয়ের পরও কাটানো সম্ভব হয় না। যেমন: পর্ণো বা হস্তমৈথুন। এমনকি এসব কারণে সংসার ভেঙে পর্যন্ত যেতে পারে। বিস্তারিত জানুন “মুক্ত বাতাসের খোঁজে” বইটি থেকে।
১.
বিয়ের কিছুদিন পরেই আপনি দেখবেন পর্ণোছবিতে আপনি যে বৈচিত্র্য পেতেন, স্ত্রীর মধ্যে তা পাচ্ছেন না। আপনার ঘরের মেয়েটি একটি পবিত্র দীনদার মেয়ে। অপরদিকে যেসব পর্ণস্টারদের আপনি দেখে অভ্যস্ত, তারা কামকলায় পারদর্শী। পর্ণো অভিনেত্রীদের ফুলবডি মেকআপ থাকে, আপনি আপনার স্ত্রীর ত্বকের ব্যাপারেও হতাশ হবেন। কেননা মানুষের ত্বক অমন মসৃণ হয় না, দাগ থাকে, তিল থাকে, লোমকূপ থাকে। পর্ণো অভিনেত্রীদের নির্লজ্জ শীৎকার (কামচিৎকার) আপনি আপনার লজ্জাশীলা স্ত্রীর মধ্যে পাবেন না। ফলে হতাশ হয়ে বৈচিত্রের জন্য আপনি আবার ফিরে যাবেন পুরনো স্বভাবে। এজন্য বিয়ে আপনাকে এই বদভ্যাস ছাড়তে সহায়ক হবে, তবে রাতারাতি নিয়ামক নাও হতে পারে। এজন্য বিয়ের আগেই ছাড়ার চেষ্টা করুন।  কিভাবে করবেন পরে বলছি।
২.
হস্তমৈথুন আরেক বদভ্যাস যা বিয়ের পরও ছাড়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। স্ত্রীর মাসিকের সময় বা নাইওর গেলে আপনি সুযোগ খুঁজবেন এটা করার। কারণ পুরনো অভ্যাস/ফ্যান্টাসি আপনার মনে হবে। স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে শয়তান আপনাকে ধোঁকা দেবে। তাই এটাও বিয়ে আপনাকে ছাড়িয়ে দেবে তা নয়, বরং বিয়ের আগেই ছাড়তে হবে আপনাকে।
৩.
নজরের হিফাজতে বিয়ে আপনাকে জাস্ট সাহায্য করতে পারে। কিন্তু আপনার নিজের চেষ্টাই মুখ্য এবং তা শুরু করতে হবে বিয়ের আগে থেকেই। বিয়ে করার পর দিন থেকেই আপনি বিরাট চক্ষুসাধক হয়ে যাবেন এমনটা নয়।
৪. আল্লাহ বলেছেন, পবিত্র নারী পবিত্র পুরুষের জন্য। আপনি যদি নিজেকে তৈরি না করেন,পরিপূর্ণ তাওবা করে চোখের পানিতে ধুয়ে সাফ না করেন, অনুশোচনায় পুড়িয়ে খাঁটি না হন তাহলে পবিত্র নয়নজুড়ানো স্ত্রী তো ফর্মুলামতে পাচ্ছেন না। তাই নিজেকে নিজের স্ত্রীর জন্য তৈরি করুন। গুনাহ ছাড়ুন।

কীভাবে আগেই ছাড়বেন এগুলোঃ
১. যিকরুল্লাহর অভ্যাস
২. কুরআনের অভ্যাস
৩. নফল রোজা। আমার একদিন কি নফসের একদিন।
৪. বেশি বেশি নফল নামায গুনাহ থেকে বাঁচায় (ইশরাক, চাশত, আাওয়াবীন, তাহাজ্জুদ)
৫. ঐ মুহূর্তে ৩ টার একটা থেকে বেরিয়ে আসুন। হয় ডিভাইস থেকে, না হয় নির্জনতা থেকে, না হয় চিন্তা থেকে (কাউকে ফোন করুন, কথা বলুন)
৬. প্রতি নামাযের শেষে সূরা তাওবার শেষ ২ আয়াত, সূরা নাস, ফজরের পর ১০ বার সূরা ইখলাসের আমল করতে পারেন।
৭. ঘুমের আগে নেট চালানো বাদ।
৮. গুনাহ হয়ে গেলে তাওবা করুন। দুআ, সাদাকা করুন।
৯. পর্নোগ্রাফি যদি দেখেই ফেলেন, হস্তমৈথুনের ইচ্ছা যদি জাগে, প্রস্রাব করে আসুন, কামভাব কমে যাবে।
১০. নিজেকে শাস্তি দিতে পারেন। একবার গুনাহ হলে ২০ রাকাত নফল।
১১. ‘গুনাহ ছাড়া’ এটা আল্লাহর তাওফীক। আমি চাইলাম আর ছেড়ে দিলাম এমন না। আর আল্লাহ তৌফিক তাকেই দেন যার তলব আছে। যে চায়। এজন্য আমার গুনাহ ছাড়ার নিয়ত ও চেষ্টার কমতি নেই, এটা আল্লাহকে দেখাতে হবে। আল্লাহ তৌফিক দিবেন।
১২. মনের উপর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছেন বুঝলে মিসওয়াক করুন। নফসকে কষ্ট না দিয়ে গুনাহ ছাড়া অসম্ভব। আজকেই শেষ, নেক্সট বার থেকে কষ্ট দিব এমন হলে নেক্সট বার আর আসবে না জীবনে।

খ. নিয়ত করুন:
১. আল্লাহর রাজির জন্য বিবাহ বসিব।
২. আল্লাহর হুকুম পুরা করার জন্য
৩. নবীজীর সুন্নাহর উপর আমলের জন্য
৪. গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য
৫. দীন পরিপূর্ণ করার জন্য
৬. জান্নাতে একসাথে থাকার জন্য
৭. বিয়ে খাহেশাত না, বিয়ে একটা পবিত্র আমল।

গ. দুআ ও আমাল:
১. সূরা ফুরক্বানের ৭৪ নং আয়াত
২. সূরা ইয়াসীনের নং আয়াত
৩. আাগেপিছে ১১ বার দরুদসহ ১১১১ বার “আল্লাহুম্মা ইয়া জামিউ'”
৪. আপনি যেমন স্ত্রী চান (হার্ডওয়্যার +সফটওয়্যার) পুরো কনফিগারেশন বলে বলে দুআ করুন। আল্লাহকে সব বলা যায়। কোন লজ্জা করবেন না। চুল কতবড়, চোখ কেমন চান, হাসি কেমন চান, মনটা কেমন চান, রান্না কেমন চান সব বলুন। দেখবেন আল্লাহ এমন একটা ব্যালেন্স করে দেবেন, দিলখুশ হয়ে যাবে।
৫. সব চাওয়া শেষে লাস্টে ফয়সালা আল্লাহর উপর ছেড়ে দেন : “রাব্বি ইন্নী লিমা আনঝালতা ইলাইয়া মিন খাইরিন ফাক্বীর”- আয় আল্লাহ, আপনি আমাকে যেটা দিবেন ওটাই আমার দরকার, আমি ওটারই কাঙাল। (মূসা আলাইহিস সালামের দুআ)
৬. অনেক আমল আর চেষ্টার পরও বিয়ে হচ্ছেনা, নির্ভরযোগ্য স্থানে শারঈ রুকিয়া করা যেতে পারে।

ঘ. পাত্রী নির্বাচন:
কেমন সন্তান আপনি দুনিয়াতে রেখে যেতে চান প্রথমে এটা ঠিক করুন। তাহলে সন্তানের মা নির্বাচন সহজ হয়ে যাবে। যেরকম মা দিবেন, সন্তান অমনই হবে। স্ত্রীসহ তবলীগে গিয়ে এমন অনেক বাসায় দেখেছি ৫ বছরের মেয়ে দাওয়াতের কথাগুলো বলছে। ৩ বছরের মেয়ে পর্দা বুঝে গেছে, মা যার সামনে যায়না সেও তার সামনে যায় না। ১৫ মাসের মেয়ে বাচ্চা, মা ঘুমপাড়ানোর সময় আল্লাহ-আল্লাহ বলে ঘুম পাড়াতো, সেও একটা পুতুল নিয়ে আল্লাহ-আল্লাহ স্পষ্ট বলছে আর ঘরময় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এজন্য নিয়ত ঠিক করুন। একটি দুর্ঘটনা, সারা জীবন-কবর-আখিরাতের কান্না।
১. আপনি তো আর আপনার স্ত্রীর কামাই খাবেন? না। তাই আপনার স্ত্রীর শিক্ষাগত ডিগ্রী আপনার কাজে আসবে না। অনেকে বলে বাচ্চাকে পড়ানোর জন্য শিক্ষিত মেয়ে লাগবে। বাচ্চাকে পড়াতে মাস্টার্স পাশ মা লাগবে না। হাইস্কুলেও মাস্টার্স টীচার অপ্রতুল। স্ত্রীর ডিগ্রী আপনাকে সুখী করবে না। আপনার প্যারেন্টস হয়ত সমাজে ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার/ক্যাডার পুত্রবধূ দেখিয়ে সুখী হতে পারেন। কিন্তু আপনার সুখ ওতে নেই। বরং হাজার উদাহরণ পাবেন এগুলোই (উচ্চশিক্ষা/ডিগ্রী/কোর্স/চাকরি) অশান্তির কারণ হয়েছে।
২. বংশ ভাল হওয়া দরকার। বংশ মানে খান-চৌধুরী এগুলা না। এগুলোর ইসলামে অংশ নেই। বংশ বলতে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের দীনদারি ও সামাজিক অবস্থান। এটা মানে দাদা ব্রিটিশ আমলে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন কিনা, বাবা সিএসপি অফিসার ছিলেন কি না, চৌদ্দগুষ্ঠি পাঠান কি না, আত্মীয়দের দুনিয়াবি যোগ্যতা কেমন এগুলো বংশ দেখার প্যারামিটার না। বংশ দেখার মিটার হল দীন।  কয়েক খানদান ধরে দীনী মেজাজ আছে, ধরে নিতে পারেন মেয়ের মাঝেও দীনী পাবন্দি আছে। দুইতিন পুরুষ আলিম বা আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে আলিম/দীনের বুঝসম্পন্ন লোক বেশি, এগুলো দেখার বিষয়। জাস্ট ধারণার জন্য।
৩. রূপ একটা ভাইটাল বিষয়। যেহেতু আপনি টিভি দেখেন না, নজরের খিয়ানত করেন না। স্ত্রী কিছুটা সুন্দরী হলে এটা আপনার জন্য সহজ হবে। আমার ঘরেই চাঁদ আছে, রাস্তায় মোমবাতি দেখে কি করব? তবে এটাও আপনাকে ক্ষণিক তৃপ্তি দিতে পারে কিন্তু চোখের শীতলতা এর মাঝেও নেই। আল্লাহ না করুন, বউয়ের আগুনরূপ আপনার বরবাদির কারণও হতে পারে।
৪. নির্মমভাবে মেয়ের দীনদারি দেখবেন। কোন ছাড় দিবেন না। বিয়ের পর মানুষ করব, এটা শয়তানের ধোঁকা। নিজেই জংলী হয়ে যাবেন শেষে। বিয়ের আগে দীনদারি/ দীনি শিক্ষার কি হালত, বিয়ের পর কেমন দীনদারি মেইনটেইন করতে চান আলোচনা করে নেবেন। একমাত্র এটাই আপনাকে সুখী করবে। আর যদি কোনটা নাও থাকে দীনদার স্ত্রীর দীনই আপনার চক্ষু শীতল করবে, নয়নজুড়ানো বউয়ের স্বামী হবেন আপনি। নয়নজুড়াতে ৩৬-২৪-৩৬ জরুরি না। জরুরি একমাত্র দীন।
দীনদারির লেভেল বুঝবেন কিভাবে?
নামাযী মানেই দীনদার, নিকাব করলেই দীনপ্রাণা? আই ওয়াজ রিজেক্টেড বাই আ ফুল শারঈ পর্দানশীন গার্ল বিকজ আই ওয়্যার জুব্বা এন্ড পাগড়ি। পরে জেনেছি। নামায পড়ার চেয়ে ফুল পর্দা করা কঠিন। বোরকা পড়ার চেয়ে পর্দা লাইফস্টাইল মেনে চলা কঠিন। দাড়িওয়ালা ছেলে বিয়ে করা আরও কঠিন। সুন্নাতের প্রতি ভালোবাসা আছে কি না দেখবেন। পীর সহীহ কি না বুঝার মাপকাঠি হল সুন্নাহর পাবন্দি। বউও তো একজাতীয় পীর-ই। সম্ভব হলে পুরো সুন্নাহ শইল্যে নিয়ে মেয়ে দেখতে যাবেন। যেটুকু নিয়ে মেয়ে দেখতে যাবেন, বিয়ের পর এর চেয়ে কমবে আপনার সুন্নতগিরি। তাই লেভেল হাই তুলে যাবেন যাতে কমলেও বেশি না কমে।
৫. আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ‘কুফু' বা সাদৃশ্য। এক হাদিসে নবীজীও কুফু রক্ষা করতে বলেছেন। রূপে তো আপনার থেকে বেশি হতেই হবে। আর দীনদারি (এলেম বেশি থাকাই দীনদারি না, দীন মানার যোগ্যতা/আমল হল দীনদারির মাপকাঠি) যত বেশি ততই আপনার চোখ শীতল হবে। বাকি দুনিয়াবি বিষয়গুলো যেমন মালসম্পদ, আভিজাত্য, শিক্ষাগত ডিগ্রী (জেনারেল/দীনী) এগুলো যেন আপনার থেকে বেশি না হয়। সমস্যা হবে পরে। আপনার লেভেল থেকে ঠিক একটু কম বা কমসে কম সমতা যেন থাকে, বেশি যেন না হয়। আমার খুব কাছের একজনের ঘটনা। ছেলের বাপ মেয়ের বাপকে ‘স্যার’ সম্বোধন করত, ডেকোরামে উপরে বলে। তো স্বামীস্ত্রী ঝগড়ায় এটা উঠত। পরস্পরকে অপমানই তো করা হয় ঝগড়ায়। বিয়েটা টেকেনি। এজন্যই মোটা মোটা বিষয়ে কুফুর ব্যাপারটা খেয়াল রাখা চাই। জেনারেল শিক্ষিতরা আলিমা কমপ্লিট বিয়ে না করাই সাবধানতা। ইলমের কুফু। সমস্যা হতে শুনেছি, হলেও দোষ দেয়া যায় না। আমার এই কথাগুলো মানতে কষ্ট হতে পারে, কিন্তু এটা বাস্তব, বিবাহিতরা ভাল বুঝবেন। তবে ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়। বহু ব্যতিক্রম আছে। আমার জানাতেই অনেক আলিমা-জাহেল সুখে ঘর কচ্ছেন। আপাত সতর্কতার একটা ফর্মুলা বল্লাম। এক্সেপশন ইজ নট এক্সাম্পল। (ব্যক্তিগত মত, ইগনোর করুন)

ঙ. নয়নে নয়ন:
১. পয়লা আপনার মা-বোন-ভাবীদের পাঠাবেন দেখতে। আমরা ছেলেরা রূপ দেখেই কাইত। আর মা-বোনেরা যেয়ে খুঁটিয়ে দেখবে, মেয়ে তো মেয়ে, মেয়ের দাদীকে পর্যন্ত খুঁটিয়ে দেখবে। আর মেয়েদের একটা কঠিন সিফত আছে। আভাসে অনেক বুঝে ফেলে। দুএকটা প্রশ্ন করেই ভিতরের খবর বুঝে নিবে। এজন্য মা-বোনের পছন্দ হলে পরে আপনি দেখবেন। আর না হলে আপনি না দেখেই না করে দেবেন। এতে মেয়েটার বেপর্দাও হওয়া লাগল না আপনার সামনে খামোখা।
২. আপনার মহিলারা দেখে আসার পর বা আগে ইস্তিখারা করবেন। নবীজী যেমন গুরুত্ব সহকারে সূরা শেখাতেন, তেমনই গুরুত্ব দিয়ে আত্তাহিয়্যাতু শেখাতেন (হাদিস)। যেমন গুরুত্ব দিয়ে আত্তাহিয়্যাতু শেখাতেন, তেমনই গুরুত্ব দিয়ে ইস্তিখারার দুআ শেখাতেন (হাদিস)। ওহী বন্ধ, কিন্তু ইস্তিখারা বন্ধ হয়নাই। সাতদিন পর্যন্ত ২ রাকাত পড়ে ইস্তিখারার দুআ চলবে। স্বপ্ন দেখবেন এটা জরুরি না, তবে কোন একদিকে মন ঝুঁকে পড়বে, পজিটিভ বা নেগেটিভ। প্রত্যেক কাজে ইস্তিখারা করা চাই চাকরি/ব্যবসা/সাবজেক্ট চয়েস/বিয়ে/সন্তানের বিয়ে, যেকোন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের আগে।
৩. মেয়ের সকল তথ্যাদি, মা-বোনের রিপোর্ট, ইস্তিখারার রেজাল্ট, মেয়ের পরিবার-আত্মীয় সম্পর্কিত ডেটা নিয়ে কোন প্রিয় ভারি বয়সের আলিমের সাথে পরামর্শ/মাশওয়ারা করুন। ওহীর অবর্তমানে আল্লাহর পক্ষ থেকে খায়েরের ফয়সালার জন্য নবীজী আমাদের ২ জিনিস শিখিয়েছেন- ইস্তিখারা ও আলিমের পরামর্শ। ভারি অভিজ্ঞ আলিমের ইশারায় কাজে কনফিডেন্স পাবেন, কলিজা আর কলিজা।
৪. আপনার বাবা কিন্তু এখন মেয়ে দেখবে না। আপনার বাবা দেখবেন বিয়ের পর। যতখন মেয়েটা আপনার বউ না হচ্ছে, ততখন সে আপনার দীনী বোন। দীনী বোনের পর্দা যেন নষ্ট না হয়।
৫. আপনার মা/বোন কিংবা মেয়ের ভাই/মাহরামের উপস্থিতিতে আপনি মেয়েকে দেখবেন। নবীজী তাগিদ দিয়েছেন বিয়ের আগে পরস্পরকে দেখার ব্যাপারে। একজন মুসলিমার প্রাপ্য সম্মান বজায় রেখে কথা বলবেন। এমন কোন প্রশ্ন করবেন না যাতে সে আহত হয়/লজ্জা পায়। কঠোর কোন দাবী করবেন না যে, বিয়ের এটা করতে হবে, ওটা করতে হবে, রাজি আছো কি না। এক বোন আমাকে দাবি পেশ করেছিলেন, বেডরুমের পাশাপাশি তাঁর শুধু পড়াশুনোর জন্য আরেকটা রুম লাগবে, দিতে পারবো কি না। কোনমতে মানে মানে কেটে পড়েছি। অবশ্যই ‘আপনি’ সম্বোধনে কথা বলবেন। তাঁকেও আপনার ব্যাপারে জানার সুযোগ দিবেন। খালি নিজেই ইন্টারভিউ নিয়ে এসে পড়বেন না। প্রশ্ন করার সুযোগ দিবেন ম্যাডামকে।
৬. আপনার ভাল লাগলে আপনার অভিভাবকদের দ্রুত জানান। কারো একটা একটা জিনিস সুন্দর হয় না। প্রতিটা মানুষই সামগ্রিকভাবে সুন্দর। একটা কমি পূরণ করে দেয় আরেকটা কিছু। রূপ+কথা+দীনদারি+স্বামীকে নিয়ে স্বপ্ন সব কিছু মিলিয়েই একজন মেয়ে সুন্দর। শুধু রূপসী বহু পাবেন যাদের বাকিগুলোয় ভয়ানক কমতি আছে। তাই ওভারঅল নিয়ে চিন্তা করে সামগ্রিক সিদ্ধান্তে আসুন।
৭. সবার তকদীরে সবাই নেই। আপনার ভালো নাও লাগতে পারে। আপনি আপনার লোকজনকে জানান, তাঁরা ডিপ্লোমেটিক্যালি জানিয়ে দিবেন। মেয়েটিরও আপনাকে ভাল না লাগতে পারে। কষ্ট পাওয়ার কিছু নেই। আসল জনের জন্য দুআ করুন, আল্লাহ তাড়াতাড়ি উহাকে আমার বুকে আনিয়া দাও।
৮. মিয়া-বিবি রাজি হয়ে গেলে শানাই বাজাবেন না। মিউজিক জায়েজ নাই। তবে দেরি করতে নবীজী নিষেধ করেছেন। যে কারো দিল ঘুরে যেতে পারে। তাই দ্রুত তারিখ ঠিক করার চেষ্টা করুন। আর হ্যাঁ, পছন্দের পর বিয়ের আগে মেয়ের সাথে আবার দেখা করা তো দূর কি বাত, ফোনে গল্পগুজবও জায়েজ নেই।

আন-নিকাহ:
১.
বিয়ের তারিখ ঠিক হয়ে যাবার পর আপনাকে কঠোর কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে। একটা সম্পর্কের শুরুটা মোটেও সমীচীন হবে না আল্লাহর নারাজি দিয়ে শুরু করা। সুন্নাতের খেলাফ আল্লাহর হুকুম নষ্ট করে যে সম্পর্কের শুরু তা বারাকাতময় হবে কিভাবে। খায়েশাতের বিয়ে যারা করে তারা খায়েশ পুরো করে, হৈহুল্লোড়, ফটোগ্রাফি, ভিডিও, গায়ে হলুদ, ডিজে-ডান্স, সাউন্ড সিস্টেম, লৌকিকতা। মনে রাখবেন, আপনি করছেন আমল, আল্লাহর খুশির জন্য। শুরুতেই ছাড় দিবেন না। নিজের পরিবার, কনের পরিবারের সামনে স্পষ্ট করে আপনার চাওয়া জানিয়ে দিন।
ক. গায়ে হলুদ:
হবে না। এটা এবং বাগদান (এনগেজমেন্ট) দিনের আলোর মত স্পষ্ট হিন্দু  সংস্কৃতি থেকে প্রবিষ্ট। গায়ের মাহরামের ইনভলভমেন্টে ফরজ পর্দা নষ্ট হওয়া থেকে নিয়ে ফটোগ্রাফি, ডান্স, ডিজে, লোকদেখানো অহেতুক খরচ, ফ্রিমিক্সিং অনেকগুলো হারাম কাজের উপলক্ষ। যা কোনভাবেই আপনার দাম্পত্যজীবনে আল্লাহর লানত ছাড়া বারাকাহ টেনে আনবে না। হুঁশিয়ার। 

খ. পর্দা:
ওয়ালীমাতে নারীপুরুষ আলাদা ব্যবস্থা হবে। কনে পর্দার সাথে থাকবে। নন-মাহরাম কেউ কনে দেখবে না। কনের ছবি কেউ তুলবে না, ভিতরের মহিলারাও না। বদদীন মহিলারাও ছবি তুলে স্বামীকে গিয়ে দেখায়। শুরুতেই ফরজের সাথে কম্প্রোমাইজ করবেন না। কমপক্ষে কনের পর্দা রক্ষায় কঠোর থাকুন। আল্লাহ খুশি হবেন।

গ. বিয়ে মসজিদে:
বাংলাদেশে ওপেন হার্ট সার্জারির পথিকৃৎ প্রফেসর ডা. এস. আর. খান স্যার এক বয়ানে বলেছিলেন, মুসলমানের আবার ক্লাব-কমিউনিটি সেন্টার এগুলা কি? মুসলমানের ক্লাব-কমিউনিটি সেন্টার হল মসজিদ। মুসলমানের অবসর কাটবে মসজিদে। মুসলমানের বিয়েশাদী, বিচারসালিশ সকল সামাজিক কর্মকাণ্ডের মারকাজ/কেন্দ্র হবে মসজিদ। আজ আমাদের সাথে মসজিদের কত দূরত্ব। এজন্যই আমাদের জীবনে বারাকাহ নেই।
মুসলমানের বিয়ে মসজিদে। সুন্নাহ এটাই। মেয়ের বাবা মেয়ের অনুমতি নিয়ে মসজিদে আসবে। মেয়ে আসবে না। ছেলের কাছে প্রস্তাব পেশ করবেন ইমাম সাহেব। ছেলে জোরে বলবে, আলহামদুলিল্লাহ আমি কবুল করছি। ৩ বার বলা জরুরি না। চিড়িয়ার মত দাঁড়িয়ে সবাইকে সালাম দেয়াও অদরকারি প্রথা। ব্যস, হো গ্যায়া। পুরো সমাজ, মানে উপস্থিত মুসল্লীরা সাক্ষী হয়ে গেল যে আপনি অমুকের এত নং বেটিকে শাদী করেছেন। ওয়ালীমা করলে সাক্ষীর সংখ্যা আরও বাড়ল। কাবিন, রেজিস্ট্রি, ২ সাক্ষী এগুলো সরকারি হিসাব। পরে করে নেবেন। আল্লাহর খাতায় আপনারা স্বামী-স্ত্রী, মেয়েটি আপনার জন্য হালাল। সাক্ষী পুরো সমাজ।
খেজুর ছিটানো সুন্নাহ। যেহেতু বিয়ে একটা আনন্দের উপলক্ষ, নবীজী ছিটিয়ে দিতে বলেছেন। সবাই লাফিয়ে ধরবে। ভিজা ভিজা আঠালো খেজুর নিবেন না, খোরমা নিবেন, তাহলে ছিটালে মসজিদ ময়লা হবে না। আর পাবলিক ধরবে হাতে, মুখে চিল্লাপাল্লা হবে না। তবে ইমাম/মসজিদের খাদিম নিষেধ করলে হাতে হাতে খেজুর বণ্টন রতে পারেন।

ঘ. কাবিন:
কাবিননামা দ্রুত করে ফেলবেন। এখন আমাদের ঈমান দুর্বল, তাকওয়ার অভাব। কাবিন, রেজিস্ট্রি মেয়ের নিরাপত্তার জন্য। ছেলে কিছুদিন সংসার করে পালিয়ে গেল। বা লজ্জা ভুলে বেহায়ার মত অস্বীকার করল। তখন? মেয়েটা যেন আইনের দ্বারস্থ হতে পারে, বিচার পায়। এজন্য বিয়ের মজলিসেই, না হয় পরে যত দ্রুত সম্ভব।

ঙ. বরযাত্রী:
৫০০ বরযাত্রী যাবে মেয়ের বাপকে খসাতে। তারপর এসে খাবার নিয়ে সমালোচনা, গেট ধরা, শ্যালিকা হাত ধুয়ে দেয়া এসবের ইসলামে অনুমোদন নেই। হুজুর সা. নিজে মেয়েকে আলীর রা. ঘরে দিয়ে আসেন। আবু বকর রা. গিয়ে দিয়ে আসেন আম্মাজান আয়িশাকে রা.। মেয়ের বাড়িতে খানাপিনা হবে না। উত্তম তো কনের বাপ গিয়ে কনেকে দিয়ে আসবে। না হয় দীনদার ছেলে সাথে ২/৩ জন গিয়ে মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে আসে, মেয়ের বাসায় কিচ্ছুই খায় না। মোট কথা মেয়ের বাপের কোন খরচ নেই মেয়ে বিয়ে দিতে। মাহর, ওয়ালীমা সব ছেলেপক্ষের খরচ। ইসলামে মেয়ে পিতার জন্য বারাকাহ। আর আমরা হিন্দুয়ানি প্রথা ঢুকিয়ে জাহেলিয়াতের মত মেয়েকে পিতার জন্য বোঝা বানিয়ে দিয়েছি। একান্তই মেয়ের বাবা লৌকিকতার তাগিদে খানাপিনার চাপাচাপি করলে অনূর্ধ্ব দশ গিয়ে খেয়ে আসবেন। ইসলাম সহজ, খায়েশাতই কঠিন।

চ. যৌতুক:
প্রশ্নই ওঠে না। আগেই বলেছি মেয়ের বিয়েতে মেয়ের বাবার কোন খরচ ইসলাম রাখেনি। খবরদার। কোন চাপাচাপি/দাবি করবেন না। শ্বশুর জামাইকে হাদিয়া দিবে ভাল কথা। এজন্য সারা জীবন পড়ে আছে। বহুত হাদিয়া দিবে। জাস্ট বিয়ের সময় নিবেন না। এমনকি বরের বাসায় কাপড়চোপড় পাঠানো, তা নিয়ে আবার গীবতের মজমা বসে। আপনি একটু কঠোর হলে কত গুনাহ রোধ করতে পারেন।
অনেকে যৌতুক নেন না ঠিকই, আবার বউকে কথাও শোনান। বরযাত্রী যান না, আবার শাশুড়ি বউকে খোঁটাও দেয়, তোমার বাপের তো কোন খরচই হয়নি, খালি মেয়েটা দিয়েই খালাস। অনেকসময় এই খোঁটার ভয়েই মেয়ের বাপ অনুষ্ঠান করে/যৌতুক দিতে চায়। মুসলিমকে এই খোঁটা দেয়া/উপহাস ভয়াবহ রকমের কবিরা গুনাহ। তাওবা ছাড়া মাফ না হবার সম্ভাবনা।
কিছু বিষয়ে আল্লাহর জন্য কঠোর হয়ে যেতে হয়। যারা বেজার হবে, তাদের খুশি করার দায়িত্ব আল্লাহর (হাদিস)। আপনার কাজ শুধু আল্লাহকে খুশি করা। যত পরিমাণ সুন্নাহর উপর আমল হবে ধরে নিবেন আপনার দাম্পত্য জীবন তত সুখের হবে ইনশাআল্লাহ।

২.
অনেক সময় এত স্ট্রিক্ট থাকা সম্ভব হয় না। আপনি শুরুতেই ছাড় দিলে আপনার সব যেত, ফরজও যেত। এখন শুরুতে কঠোর হলেন, ছাড় দিলেও কিছু তো হবে। আল্লাহর কিছু ফরজ হুকুম তো রাখতে পারবেন। এখন আলিমগণের সাথে পরামর্শ করে ঠিক করুন কতটুকু ছাড় দিবেন। ফরজ পর্দা প্রভৃতির সাথে আপোস প্রশ্নই আসে না। তুলনামূলক কম সিরিয়াস বিষয়গুলো আলিমের পরামর্শক্রমে ছাড় দিতে পারেন।

ছ. মাহর:
আমার আগে ১ জন মাত্র রাবী, সহীহ সনদ। মেয়ের বাপ মাহর চেয়েছে ৪০ লাখ টাকা। কেন? আমার মেয়েকে যদি ছেলে ছেড়ে দেয়। ঠিকই ৬ মাসের মধ্যে ৪০ লাখ টাকা পে করেই ডিভোর্স হয়েছে।
বেশি মাহর বিয়ে টেকার ইনসিওরেন্স না। বরং যে বিয়ে মাহর কম, সে বিয়েতে বারাকাহ বেশি (হাদিস)। মাহর বিষয়টার অনেক সামাজিক প্রভাব আছে। উলামাগণের অনেক কিতাবও পাবেন। প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি, হঠাৎ যদি আপনি মারা যান, আপনার স্ত্রীসন্তান যেন পথে বসে না যায়, কিছুটা আর্থিক সিকিউরিটি ইস্যু। তাই বরের সামর্থ্যানুযায়ী যতটা সম্ভব মাহর নির্ধারণ করুন। সামর্থ্যের মধ্যেই বেশিটা। লোক দেখানোর জন্য সামর্থ্যের অতিরিক্ত মাহর দাম্পত্য বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে।
অনেকে মাহরে ফাতেমী নির্ধারণ করেন। আলী রা. যে মাহরে ফাতিমা রা. কে বিয়ে করেছিলেন। আলী-ফাতিমা রা. কেমিস্ট্রির বারাকাহ পাবার জন্য এটা করা হয়, কেননা এতে স্বয়ং নবীজীর অনুমোদন ছিল, সেই হিসেবে। তবে এটাও জরুরি না। জরুরি হল সামর্থ্যের ভিতরে লৌকিকতা বিবর্জিত হওয়া। আলিমগণের সাথে পরামর্শ করতে ভুলবেন না এ বিষয়ে।

জ. বাসর-রাত/ প্রথম-রাত:
কিছু ইলমের জন্য নির্ধারিত সময় আছে। অসময়ে শিখলে তা ভাল ফল বয়ে আনে না। ফিতনার কারণ হয়। বান্দা পরীক্ষায় পড়ে যায়।
- বাসররাতের আগ পর্যন্ত যারা পৌঁছে গেছেন বাস্তব জীবনে
- ঈদের পর বাসররাতে পৌঁছবেন
- অলরেডি বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করেছেন
- সুন্দর দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছেন
- যৌনজীবন নিয়ে সমস্যায় আছেন,
এই চ্যাপ্টারটা শুধুই তাদের জন্য। বাকিরা পড়া মানে নিজের ‘অবিবাহিত জীবন' আরও কঠিন করে ফেলবেন এবং ফিতনায় পড়ে যাবেন।
তাই নোটের এই অংশটুকু ঈদের পর দেয়া হবে শুধু উপরের ক্রাইটেরিয়ার ভাইদেরকে ইনবক্সে। কোন ঈদ তা পরে জানিয়ে দেব না, এখনই জানিয়ে দিচ্ছি। এই বছর রোজার ঈদের পর ইনশাআল্লাহ। সমাপ্তিও ওখানেই টানব খন।
অধিক কৌতূহলবশত কেউ মিথ্যা হলফ করে নিজেকে বিবাহিত দাবি করে কেউ যদি নোট চান, এবং নিজেকে জটিল পরীক্ষায় আবিষ্কার করেন, লেখক তা থেকে দায়মুক্ত ইনশাআল্লাহ। যারা নোটটা নিবেন তারাও তাঁদেরকেই দিবেন যারা উপরের শর্ত পুরা করেন। প্লিজ অধমকে গুনাহগার বানাবেন না। অনেক বিশ্বাস করে আপনাদেরকে দিব জিনিসটা।
ডাক্তার হবার সুবাদে অনেক মানুষ, তাবলীগের সাথী, সমবয়েসী উলামাগণ যৌনজীবনের বিভিন্ন সমস্যায় পরামর্শ চেয়েছেন নানান সময়। সেগুলো সামনে নিয়ে কিছু পড়াশুনা করেছি, বিভিন্ন তথ্য তাদের থেকে নিয়েছি, সমাধান প্রস্তাব করে ফিডব্যাক নিয়েছি, কৌশল শিখিয়ে ফিডব্যাক নিয়েছি। আলিমগণের এ বিষয়ে তেমন লেখা চোখে পড়েনি। পরবর্তী নোটের টপিক মোটামুটি এমন: যৌনমিলন, যৌনসমস্যা ও প্রতিকার (ওষুধ ছাড়া) এবং সন্তান ধারণ। নিজের চিকিৎসা বিদ্যা, আলিমগণের পরামর্শ ও জনাত্রিশেক মানুষকে দেয়া সমাধান (নন-মেডিসিন) ও নেয়া ফিডব্যাক থেকে লব্ধ কৌশল আপনাদের সামনে তুলে আনব। ইনবক্সে চাহিবামাত্র ঈদের পর দেয়া হইবে। সেকুলার বিজ্ঞান আসলেই পূর্ণ ফলাফল দেয় না যতক্ষণ তাওহীদ/ আল্লাহর দেয়া সমাধান না মেশানো হয়। সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি।

ঝ. সারাজীবনসাথী:
আর দাম্পত্য জীবনে আচরণ কেমন হবে সে বিষয়ে নিচের বইগুলো পড়ার প্রস্তাব থাকবে।
১. দুজন দুজনার, মাওলানা আতীক উল্লাহ দা. বা.
২. ওগো শুনছো, ঐ
৩. আই লাভ ইউ, ঐ
৪. প্রিয়তমা, মাওলানা সালাহউদ্দিন জাহাঙ্গীর দা.বা.
৫. মুফতি আবদুল্লাহ আল- মাসুম দা. বা. রচিত একটা বই আছে দারুণ।
৬. মাওলানা যুলফিকার আহমদ নকশবন্দী দা.বা. এর একটা বই আছে।
সবগুলোর নির্যাস নিয়ে একটা নোট লেখার ইচ্ছা রইল। আল্লাহ কবুল ফরমান।

Shamsul Arefin Shakti

Friday, June 22, 2018

প্রথমেই মেয়ে দেখতে কেমন তার খোঁজখবর নেওয়া উচিত, তারপর দ্বীনদারী

বিয়ে করতে ইচ্ছুক পাত্রদের প্রতি ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল (রহিমাহুল্লাহ) এর উপদেশ-
যখন একজন ব্যক্তি বিয়ে করতে ইচ্ছুক হয় তখন প্রথমেই মেয়ে দেখতে কেমন তার খোঁজখবর নেওয়া উচিত, এতে যদি সে সন্তুষ্ট হয় তাহলে মেয়ের দীনদারিতার ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া উচিত।
যদি মেয়ে দীনদার হয় তাহলে সে বিয়ে করে নিবে এবং যদি দীনদার না হয় তাহলে সে বিয়ের দিকে এগোবে না
[এর ফলে তার রিজেকশনটি দীনের কারনে হয়]
..
এমন যেন না হয় যে,সে প্রথমে মেয়ের দীনদারিতার ব্যাপারে খোঁজখবর নিবে এবং এতে সন্তুষ্ট হলেও পরে দেখতে কেমন সেটার ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার পর সে আগালো না [ এটাতে রিজেকশনটা দীনের কারনে না হয়ে সৌন্দর্যের কারনে হয়ে যায়]
[Sharh Muntaha-l Iradat

...
এডমিনদের কথা:
যেসব ভাই পাত্রীদের সৌন্দর্যের ব্যাপারটা এমন গুরুত্ব দেন যে পাত্রী দীনদার হলেও শুধু সৌন্দর্যের কারনে এগোবেন না, তাদের উচিত কোন প্রস্তাবে কথাবার্তা এগোনোর আগে পাত্রী দেখতে কেমন তার খোঁজখবর নেওয়া,এতে সন্তুষ্ট হলেই যেন শুধু পরবর্তী আলোচনাতে যান নাহলে এমন হয় যে দু তিন মাস ঈমান 'আমাল মাজহাব মানহাজ সহ যত কিছু আছে সব কিছু জানাশুনার পর 'দেখতে ভাল লাগছে না' বলে রিজেক্ট করে দেওয়া হয়!!!

* Source

Monday, May 28, 2018

সহজে আরবী ভাষা শিখুন ৫ টি ধাপে

arabic language learning 5 steps bangla

১. প্রথমে এই চ্যানেলের ভিডিওগুলো ভাল করে দেখুন:
https://www.youtube.com/channel/UCg5hI1RcC4u2pxbp64Szzgw
https://www.youtube.com/watch?v=JJ1nxwU_0ro&index=5&list=PL1JKv-zqJfEYrTa7TpUGb74JOjPoCojjT

ভিডিওর পাশাপাশি এই বইটি অনুসরণ করুন:
http://www.alquranervasha.com/download-book/26

২. কুরানীয় শব্দার্থ শিখুন:
বই-
http://www.alquranervasha.com/download-book/31

৩. অনুবাদ অধ্যয়ণ করুন:
http://www.alquranervasha.com/quran/quranSurah

FurqanTube ইউটিউব চ্যানেল(বাংলা অর্থ সহ ৩০ পারা কুরআন তেলাওয়াত- Mishari Al Afasy)
https://www.youtube.com/channel/UCMfe2vqHgIu3QYdI6lIbAdQ
https://www.youtube.com/watch?v=zE_WFiHnSlY&list=PLaoLNlo4d8-044EScxyu33SC9BJF5IeeH

সহায়ক হিসাবে নিচের দুটি চ্যানেল অনুসরণ করতে পারেন-

৪. আরবী কার্টুন চ্যানেল(ইংলিশ সাব টাইটেল আছে):
Arabian Fairy Tales:
https://www.youtube.com/channel/UCazFScO30FKY3YoNNDfNY5g

বিঃদ্রঃ কার্টুনের অনেক বিষয়ই ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক হতে পারে। নিজ দায়িত্বে দেখবেন।

৫. এই আরবী চ্যানেলটি দেখতে পারেন(ইংলিশ সাব টাইটেল সহ):
Fahad Alkandari l فهد الكندري:
https://www.youtube.com/channel/UCTRGcT1KQVoQA1vdNLlbjhw

ওজন কমাতে হলে- মটুদের জন্য

মটুদের জন্য,

প্রথমত: কিভাবে বুঝবেন যে আপনি মোটা ?

১. গুগলে বি এম আই লিখে, সার্চ দিয়ে, নিজের ওজন এবং উচ্চতা দিন, বি এম আই হিসাব করার জন্য। যদি বিএমআই ২৪.৯ এর বেশী হয় তাহলে আপনি মোটা।

২. নরমাল অবস্থায় যদি আপনার বুকের মাপ কোমর থেকে ২ ইঞ্ছি বেশী না হয়, তাহলেও আপনি মোটা, যদিও বিএমই ২৪.৯ এর নীচে বা উপরে।

কিভাবে মোটা হলাম?

আপনি যদি মোটা হয়ে থাকেন, তাহলে এর মানে অবশ্যই আপনি প্রয়োজনের তুলনায় ক্যালরী অনেক বেশী খান, সেই খাওয়া শরীরে চর্বি হিসেবে জমেই আপনি মোটা হয়েছেন।

মূলত: প্রবলেম হল, মানুষের জেনেটিক্স এমনভাবে ডিজাইনড, তা যতটুকু খাবার প্রয়োজন, তার অনেক বেশী তার ক্ষুধা লাগে (প্রায় ২-৩ গুণ)। যাতে সে একবারে বেশী খেয়ে ফেলে শরীরে একটু চর্বি জমে, এবং দুর্ভিক্ষকালীন সময়ে সে কম খেয়ে চলতে পারে। যদি সে শরীরে খাবারকে চর্বি হিসেবে স্টোর করতে না পারতো, তাহলে দুর্ভিক্ষ কালীন, বা খাদ্যের অভাব যখনই হতো, তখনও সমগ্র মানব জাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতো।

যেহেতু মডার্ন সাইন্টিফিক ডেভেলপমেন্ট এর আগে প্রতি বছর প্রায় কয়েক মাস খাদ্য সংকট চলতো, তাই মানব জাতির সুরক্ষার জন্য এমন জেনেটিকাল ডিজাইন আসলে দরকার ছিল। আল্লাহ তাই করেছেন, আল্লাহ ভাল জানেন।

মনে করেন, আপনি বাংলাদেশী, আপনার এভারেজ হাইট ৫-৭ ইঞ্ছি, পুরুষ। ওজন সত্তর কেজি । সেক্ষেত্রে আপনার প্রতিদিন প্রায় ২৪০০ ক্যালরী শক্তি দেয় - এর সমতুল্য খাদ্য দরকার। এখন মনে করেন, গড়পড়তায় আপনি দিনে প্রায় ২৮০০ ক্যালরী সমতুল্য খাদ্য খাচ্ছেন্। তাহলে আপনি দিনে প্রায় ৪০০ ক্যালরী বেশী খাচ্ছেন, গড়পড়তায়।

প্রতি দশ ক্যালরী = ১ গ্রাম চর্বি। তাহলে ৪০০ ক্যালরী অতিরিক্ত খাদ্য থেকে আপনার দেহে প্রতিদিন মাত্র ৪০ গ্রাম চর্বি জমা হবে। কিন্তু তাতেই মাসে ৩০*৪০ = ১২০০ গ্রাম = ১.২ কেজি ওজন বাড়বে আপনার। বছরে প্রায় ১৪.৪ কেজি বাড়বে। তবে কখনও বেশী খাচ্ছেন, কখনও একটু কম খাচ্ছেন, তাই হয়তো এত বাড়েনা। কিন্তু ৫-৬ কেজি বাড়া কিন্তু কোন ব্যাপারই না। মাত্র ৬ কেজি চর্বি যদি আপনার পেটে জমে যায়, তাহলে তা বিশাল ভুড়ি হিসেবে দেখাবে।

সমাধান?

উপায় একটাই, সেটা হল আপনার শরীরে ক্যালরী ডেফিসিট ( ক্যালরীর অভাব) ক্রিয়েট করতে হবে। তা কম খেয়ে হোক বা ব্যায়াম করে হোক। ক্যালরী ডেফিসিট ক্রিয়েট করতে পারলে, শরীর তখন চর্বি খরচ করবে, এবং আপনার দেহ থেকে চর্বি ঝরে যাবে।
মনে করেন, আপনি দিনে ২০০০ ক্যালরী করে খাওয়া একবার অভ্যাস করে ফেললেন, খুব স্ট্রিক্টলী ফলো করলেন, যে কিছুতেই ২০০০ এর বেশী খাবেন না। তাহলে দিনে প্রায় ২৪০০ - ২০০০ = ৪০০ ক্যালরী ডেফিসিট হবে। মানে দিনে ৪০০/১০ = ৪০ গ্রাম ফ্যাট ঝরবে। তাহলে মাসে ১.২ কেজি কমবে ওজন। যদি আপনি ব্যায়াম করে ২৬০০ ক্যালরী নীড তৈরী করতে পারেন, কিন্তু খাবার ঠিকই ২০০০ ক্যালরি খান, তাহলে দিনে ৬০০ ক্যালরী ডেফিসিট তৈরী হবে, এবং দিনে ৬০ গ্রাম কমবেন। মাসে ৬০*৩০ = ১৮০০ গ্রাম= ১.৮ কেজি কমবেন। আপনি যেই হারে নিজেকে কমাতে চান, ঠিক সেইভাবে কমাতে পারবেন।

এখন সমস্যা হল , এত হিসাব করে কি খাওয়া যায়? আর জীমে গেলে কি হয়?

আসলে ব্যায়াম করে খুব একটা লাভ হয়না, কারণ অনেক ব্যায়াম করলেও সামান্য ক্যালরী খরচ হয়।
মনে করেন, একটা পুশ আপ মাত্র এক ক্যালরি যায়। তাহলে ১০০ পুশ আপ দিয়ে ভাবলেন অনেক ব্যায়াম করছি... নাহ। ১০০ পুশ আপ মানে মাত্র ১০০ ক্যালরী = দুই চামচ চিনি ... এতই কম খরচ হয়। ১৫ কেজি ওজন একবার তুললেন -- মাত্র ০.৭৫ ক্যালরী। ১৫ মিনিট দৌড়ালেন, মাত্র ১০০ ক্যালরী । তাই ভিগোরাস ব্যায়াম ৩-৪ ঘন্টা করলেও মাত্র ৪০০-৫০০ ক্যালরী ডেফিসিট তৈরী হয়। খুব বেশী না। এরপর এমন ক্ষুধা লাগে, যে মানু ৩০০ ক্যালরী খরচ করে ১০০০ ক্যালরী খেয়ে ফেলে, তাই লাভ হয়না। মূল পয়েন্ট এটা না যে আপনি ব্যায়াম করলেন কি করলেন না, মূল পয়েন্ট হল, আপনি কত ক্যালরী খরচ করলেন, আর কত ক্যালরী ইনপুট দিলেন- সেটার অনুপাত। যত খরচ করবেন, তার থেকে কম খেতে হবে।

সুতরাং ওজন কমাতে হবে ৯০% ডায়েট দ্বারা আর ১০% যদি চান ব্যায়াম করতে পারেন। ব্যায়াম করলে ভাল, শরীর ফিট হয়, তবে চর্বি ঝরাতে হলে, মূল প্রায়োরিটি দিতে হবে 'কম খাওয়া' কে।

গুগলে সার্চ করে দেখে নিতে পারেন, যে কোন খাদ্যে কত ক্যালরী, কিন্তু এটা তো ঝামেলা, তাই সহজে মনে রাখবেন এভাবে:

সাধারণ খাদ্য:
ভাত-আলু (শর্করা জাতীয়) : ক্যালরী হল ১০০ গ্রামে ১৩০ ক্যালরী
ডাল-মাছ-মাংস (কোন চর্বি ছাড়া) : ক্যালরী হল ১০০ গ্রামে ১০০ ক্যালরী
চর্বি-তেল : ক্যালরী হল ১০০ গ্রামে ৯০০-১০০০ , চিন্তা করেন শুভংকরের ফাকিটা এখানেই। তেল বা চর্বি প্রায় ৯-১০ গুন ক্যালরি বেশী থাকে, তাই তেল চর্বি খাওয়া যদি খুব লিমিটেড করে দিতে পারেন, তাহলেই কিন্তু শরীরে ক্যালরী ডেফিসিট তৈরী করে ভুড়ি কমাতে পারবেন।
চিনি: ১০০ গ্রামে ৪০০ ক্যালরী। তার মানে চিনি খেতে হবে খুব কম, খুব। জাস্ট ১ চামচ চিনি দিয়ে সকালে চা-কফি খাওয়া যায়।
চানাচুর-চিপস: এগুলো তেলের মতই, প্রতি ১০০ গ্রামে ৬০০ ক্যালরী থাকে। তার মানে দিনে মাত্র ৩০০ গ্রাম চানাচুর খেলেই সারাদিনের ক্যালরি চাহিদা শেষ। বাকি সবকিছুই বোনাস খাচ্ছেন, চর্বি হচ্ছে।
মাত্র এক চামচ তেল মাত্র ১০ গ্রাম কিন্তু ক্যালরী থাকে ১০০। তার মানে তরকারী-মাংসে একটু তেল বেশী দিলেই এক বেলাতেই ৩০০-৪০০-৫০০ ক্যালরী বেশী খাওয়া হয়ে যাচ্ছে, আমরা টেরই পাচ্ছিনা। এভাবেই মোটা হচ্ছি।

তাই শরীরে ক্যালরী ডেফিসিট তৈরী করতে হলে,

১. যিনি রান্না করেন তাকে বুঝান যে তরকারী বা ঝোলে, তেল খুব কম দিতে , অথবা ঝোল-তরকারী-ডাল খাবার খুব কমিয়ে দিন। পারলে না খান। কারণ অতিরিক্ত তেল দেয়া হয়। এজন্যই বাংগালি মোটা হচ্ছে। ডিম খাবেন সিদ্ধ , মাত্র ৪০ ক্যালরি - একটা ডিম। কিন্তু তেলে ভেজে খেলে ২০০ ক্যালরী হয়ে যাবে, কারণ ডিমের সাথে মাত্র ১২-১৫ গ্রাম তেল মিশে আছে।

২. ভাত খুব কম খান, মাত্র ২০০ - ৩০০ গ্রামই যথেষ্ঠ। কিন্তু ক্ষিধা?
সমাধান সহজ। মরিচ বেশী খান, ঝাল খান। দরকার হলে লাল মরিচ- বা খুব ঝাল কাচা মরিচ। ভাত-খাওয়া কমিয়ে দিবেন, কিন্তু ঝাল মরিচ খাবার বাড়িয়ে দিবেন। ব্যস, ক্ষুধা বাপ বাপ করে পালাবে। প্রয়োজনে খুব ঝাল রসুন-মরিচ ভর্তা চালাতে পারেন, ব্যাপক কাজ দেয়। তবে তেল ঝরিয়ে।

৩. মাংস খাবার কমাতে হবে, কারণ মাংসের ফাকে ফাকে চর্বি থাকে। পিউর মাংস- যেমন মুরগী খেতে পারেন, কিন্তু ঝোল খাবেন না, বা খুব কম খাবেন ১-২ চামচ। মুরগীর চামড়া পুরাটাই চর্বি, খাওয়া যাবেনা। খেলে প্রতি ১০ গ্রামে ১০০ ক্যালরী ইনপুট হবে, সাবধান।

গরু-খাসীর মাংসে চর্বি মিশ্রিত থাকে, তাই ২-৩ -৪ টা ছোট টুকরার বেশী নয়। আর খাবার সময় বেছে বেছে চর্বিগুলো ফেলে দিবেন (গরু খাসী)।

যদি ঝোল খেতেই হয়, তাহলে শুধু মসলাটা খাবেন, তেলটা ফেলে দিবেন। ওই তেলটাই আপনাকে পঙ্গু করে দিচ্ছে, মানে ভুড়ি বানাচ্ছে। ভুড়ি হওয়া আর পঙ্গু হওয়া তো একই কথা, রাইট?

৪. সবজিতে ক্যালরী ১০০ গ্রামে ৩০-৪০. খুব কম তাই সবজি-সালাদ এগুলো খেয়ে পেটকে ধোঁকা দিবেন। পেটকে ভরে রাখবেন। ক্ষুধা নিবারণ করবেন সবজি দ্বারা বেশী, তেল-চর্বি দ্বারা কম।

৫. ফলে ক্যালরী অবশ্য খুব ভ্যারী করে, মিষ্টি ফলগুলোতে বেশী ১০০ গ্রামে ৩০০ , মিষ্টি ফলগুলোতে কম: ১০০ গ্রামে ৪০-৫০ , তাই ফল খেতে হলে গুগলে সার্চ দিয়ে ক্যালরী দেখে খান। তবে পেয়ারা-আমড়া-আপেল এগুলোতে কম থাকে ক্যালরী। মরিচ দিয়ে খেয়ে ক্ষুধাকে তাড়াতে পারেন।

৬. আপনি কম খাওয়া শুরু করলে, আপনার পেট সারাদিন খালি বলবে, আমি কিচ্ছু খাইনা, কেমনে বাচবো। এগুলো শয়তানের ওয়াসওয়াসা মনে করবেন। মাত্র ২ কেজি চর্বি শরীরে জমা থাকলে তা দিয়ে বিশ হাজার ক্যালরি হয়, তাই দিয়ে ৬ দিন আপনি বেচে থাকতে পারবেন, শুধু পানি খেয়ে। তাই খাওয়ার আসলে কোন দরকারই নেই। হেহে

৭. আপনার দেহের প্রায় ১৫ ভাগ ই চর্বি। মানে কোন ভুড়ি যদি নাও থাকে তাহলেও ৭০ কেজি মানুষের শরীরে দশ কেজি চর্বি থাকে। আর যদি ভুড়ি থাকে, তাহলে ভুড়ির চর্বি তার সাথে যোগ হবে। কিছু না খেয়ে শুধু পানি খেয়েই আপনি ২-৩ মাস বেচে থাকতে পারবেন, কোন প্রবলেম হবেনা। পিউর সাইন্স।
তাই পেট যখনই উচ্চ বাচ্য করবে, তখনই বুঝবেন, যে শয়তান তাকে কুরকুর করাচ্ছে, লাল বা কাচা মরিচ দিয়ে ঠান্ডা করে দিবেন। মনে রাখবেন, জাস্ট লাল মরিচ-রসুন ভর্তা খেয়েই ওজন কমানো যায়্ কারন মরিচ-রসুনে কোন তেমন কোন ক্যালরী নাই, কিন্তু খাইলেই পেট ঠান্ডা।

৮. আপনি বাঙ্গালী হলে অবশ্যই রাতে ভাত না খেলে আপনার আমার মতই ঘুম হয়না। তাই কোন প্রবলেম নাই, রাতে রুটি খেতে হবেনা, ভাতই খান, ২০০-২৫০ গ্রাম ভাত আর ৩-৪-৫-৬ টা কাচা মরিচ অথবা রসুন মরিচ অথবা খুব কম তেলে ভাজা -পোড়া পোড়া -বেগুন-মরিচ বা মরিচ দিয়ে আর কি ভর্তা বানাইতে পারেন, তেল ছাড়া ,ওইটা বানাইয়া পেটকে সাপ্লাই দিবেন। দেখবেন পেট নামক শয়তান ঠান্ডা হয়ে আছে। বেশী ঝাল খেয়ে আবার ডাইরিয়া কইরেন না কিন্তু। তবে মাঝে মাঝে হইলে প্রবলেম নাই, আল সার না হইলেই হইলো। দুপুরে আর একটু কম খান ১৫০-২০০ গ্রাম।

৯. মন মতন পেট পুরে যদি খান, বেশী না, জাস্ট পেট যতটুকু চায়, ততটুকু। তাহলে অবশ্যই আপনি মোটা হয়ে যাবেন। কারণ এক দমে পেট প্রায় ২০০০-২৫০০ ক্যালরী পর্যন্ত নিতে পারে। কিচ্ছু হয়না। ২০০০ ক্যালরী খাবার পর মনে হয়, পেট ভরে খাইছি। আর ৭০০-৮০০ ক্যালরী খেলে মনে হয়, আমি কি রোযা আছি?
মনে রাখবেন, পেট আপনাকে সারাদিন মিথ্যা কথা বলে ভুলিয়ে ভালিয়ে খালি খাওয়াতে চাইবে। মনে রাখবেন ,পেট = বিবি নিয়াহু। পেটকে বিবি নিয়াহু মনে করে, তাকে মরিচ দিয়ে দিবেন। ঠান্ডা হয়ে যাবে।

১০. পেটকে বিভিন্ন ভাবে কম ক্যালরী যুক্ত খাদ্য মরিচের সাথে মিশিয়ে খাবালেই দেহে ক্যালরী ডেফিসিট তৈরী হবে, এবং আপনি ভুড়ি মুক্ত হতে পারবেন।

১১. ব্যায়াম করে ক্যালরী নীড একটু বাড়াতে পারেন। তবে খুব একটা লাভ হবেনা, যদি খাওয়া কনট্রোল করতে না পারেন।

১২. ডায়েট কোলা, যেগুলো তে ক্যালরি থাকেনা, সেগুলো খেয়ে পেট ভর্তি করে রাখতে পারেন। ক্ষিধা লাগবেনা, কিন্তু শরীর খাদ্য না পেয়ে বাধ্য হয়ে চর্বি খরচ করবে। তবে এগুলা কেমিকেল, লং টাইম ভাল না।

১৩. মূল পয়েন্ট একটাই, ক্যালরি যতটুকু দরকার, তার থেকে কম খেলেই ভুড়ি কমবে। যত কম খাবেন, তত তাড়াতাড়ি কমবে। আর বেশি খেলে বাড়বে। সহজ হিসাব।

তাই যদি সত্যিই সিরিয়াস হন, তাহলে একটা ওজন মাপার মেশিন কিনুন। সব খাদ্যের তালিকা বানান, তারপর ওগুলো ওজন করে করে ক্যালরী হিসাব করে খান। কথা দিচ্ছি, মাত্র ২-৩ মাসে ৭-৮ কেজি কমানো কোন ব্যাপারই না, জাস্ট মেন্টাল একটা ডিসিশন নিতে হবে। একটু পাগলামী(!!) করতে হবে। আর কিছুনা।
চিনি-তেল-চর্বি -ভাজা পোড়া-চানাচুর-চিপস-তরকারীর ঝোল- এগুলো হয় বাদ, না হয়, খুব লিমিটেড করে দেন। আর ঝালমরিচ-মসলা-সবজি-সালাদ- এইগুলা বাড়ান, ভাত খান, বাট খুব কম খান। ব্যস, ডান। খুব সহজ। কোন ব্যাপারই না। সিম্পল, খুব সিম্পল। ইনশাআল্লাহ, চেষ্টা করলেই হবে।

[সংগৃহীত, সংক্ষেপিত]

মুল লেখা :M. Rezaul Karim Bhuyan

#
গতকাল আমরা বলেছিলাম ওজন কমাতে হলে ক্যালরি হিসেব করে পরিমিত পরিমানে খেতে হবে। কিন্তু কখন কতটুকু কি খেলে টার্গেট ক্যালরি পুরন হবে সেটা বলা হয়নি। আজ আমরা আমাদের সাধারণ শিক্ষিতদের ভাষায় খাবার তালিকাটা তুলে ধরব। ডাক্তারের ভাষায় নয় যদিও অবশ্যই এটা ডাক্তারদেরই প্রেসক্রাইবড বিষয়। বন্ধুরা আমাদের মনে রাখতে হবে যে এটা কুরআন হাদিসের ব্যাপার নয় যে ভায়োলেট করলে বা কমালে বাড়ালে বিদয়াত হবে।

যাহোক শেষ পর্যন্ত আমাদের ওজন কমাতে হলে মুল কাজ ক্যালরি ডেফিসিয়েট তৈরী করা। এলক্ষ্যে আমাদের দৈনন্দিন কাজে শরীরে যে ক্যালরি লাগে তার চেয়ে কম ক্যালরী নিতে হবে অথবা যে ক্যালরী নিই তার চেয়ে বেশি ক্যালরি খরচ করতে হবে। আমরা যদি কম ক্যালরি নিই এবং ব্যায়াম করে বেশি ক্যালরি খরচ করি তাহলেই সবচেয়ে দ্রুত ফল পাওয়া যাবে।

এটা অবশ্যই খেয়াল করার বিষয় যে একজন খেলোয়াড়ের জন্য যে হিসাব আর সারাদিন যে ডেস্কে বসে কাজ করে তার হিসাব এক নয়। এখানে যে ডায়েট স্টাইল দেওয়া হল তা স্বাভাবিক কর্মজীবিদের জন্য। আর ব্যায়ামের ভালো এপ্স আছে দেখে নিবেন।

টার্গেট খাদ্য উপাদান,

ক্যালরি ২০০০
শর্করা ৩০১ গ্রাম
আমিষ ৭৬ গ্রাম
চর্বি ৫১ গ্রাম

সকাল ৭- ৮ টা

১। ছোট পাতলা আটার রুটি ৪ টি অথবা আধা কাপ ভাত
২। ডিম ১ টি অথবা ঘন ডাল আধা কাপ
৩। সবজি আনলিমিটেড অথবা লিমিটেড যেকোন একটা [নিচে দ্রষ্টব্য সেকশনে লিমিটেড ও আনলিমিটেড সবজির লিস্ট আছে]

সকাল ১০- ১১

১। মুড়ি ১ কাপ/ নোনতা বিস্কুট ৮ পিস/ পাউরুটি ১ টুকরা/ ছোট ১ বাটি নুডুলস
২। ফল আনলিমিটেড অথবা লিমিটেড যেকোন একটা [নিচে দ্রষ্টব্য সেকশনে লিমিটেড ও আনলিমিটেড ফলের লিস্ট আছে]

দুপুর ২-৩ টা

১। ভাত ৩ কাপ
২। ২ টুকরা মাছ কিংবা ২ টুকরা মাংস
৩। ডাল ১ কাপ
৪। সবজি আনলিমিটেড অথবা লিমিটেড যেকোন একটা
৫। প্রচলিত যে কোন টাইপের শাক

বিকাল ৪-৫ টা

১। মুড়ি ১ কাপ/ নোনতা বিস্কুট ৮ পিস/ পাউরুটি ১ টুকরা/ ছোট ১ বাটি নুডুলস
২। ফল আনলিমিটেড অথবা লিমিটেড যেকোন একটা

রাত ৮-৯ টা

১। ভাত ২ কাপ অথবা ছোট পাতলা আটার রুটি ৪ টি
২। ২ টুকরা মাছ কিংবা ২ টুকরা মাংস
৩। ডাল ১ কাপ
৪। সবজি আনলিমিটেড অথবা লিমিটেড যেকোন একটা

রাত ১০ টা

১। দুধ ১ কাপ

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ

১। যেকোন এক বেলায় শাক থাকবে এবং রান্নার জন্য তেল ৩০ মিলি লিটার

২। সবজি আনলিমিটেড (অর্থাৎ অনেক পরিমানে খাওয়া যাবে)- ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, ওলকপি, কাচা টমেটো, কাঁচা পেঁপেঁ, শশা, খিরা, উচ্ছে, করলা, ঝিঙা, ধুন্ধল, চাল কুমড়া, ডাঁটা, লাউ, সজনে, মরিচ

৩। সবজি লিমিটেড (অর্থাৎ অল্প পরিমানে খেতে হবে) আলু, কুমড়া, কচু, কাচা কলা, শিম, বরবটি, গাজর, কাকরোল, কাঠালের বিচি, শালগম, ঢেরশ, বেগুন, পাকা টমেটো

৪। ফল আনলিমিটেড(অর্থাৎ অনেক পরিমানে খাওয়া যাবে)- কালো জাম, লেবু, আমড়া, বাতাবি লেবু, কামরাঙ্গা, বাঙ্গি, জামরুল, কাচা পেয়ারা, দেশী কুল মিষ্টি নয়, আমলকি

৫। ফল লিমিটেড(অর্থাৎ অল্প পরিমানে খেতে হবে)- ১টি ছোট আমের অর্ধেক, ১টি বড় পাকা পেয়ারা, ৩টি মাঝারি আকারের কাঁঠালের কোয়া, ১টি মাঝারি আকারের আপেল্‌ ১টি মাঝারি আকারের কমলা, পাকা পেঁপেঁ ৬০ গ্রাম, পাকা পেয়ারা ১ টা, লিচু ৬ টা, আতা ফল ১ টা, ছোট কলা ১টা, আঙ্গুর ৬ টা, খেজুর ৩ টা, আনারস ৬০ গ্রাম ইত্যাদি

ইবাদাতের নিয়তে শরীর ফিট রাখতে হবে। পেট মোটা কোন হুজুর দেখতে চাই না। মহান আল্লাহ সহজ করুক।

* S M Nahid Hasan

Sunday, April 29, 2018

আপনি আপনার স্ত্রীকে সম্মান করলে তিনিও আপনাকে সম্মান করবেন।

সম্মান এমন একটা জিনিস যা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা মানুষকে দিয়েছেন। তিনি বনী আদমকে সম্মানিত করে সৃষ্টি করেছেন।
আপনি মানুষকে সম্মান করবেন, মানুষ আপনাকে সম্মান করবে।
পরিবারের ভেতরেও এই নিয়ম খাটে - স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা।
স্বামী-স্ত্রীর সংসার সুখের হওয়ার জন্য খুব জরুরি হচ্ছে সম্মানবোধ রাখা।
ধরুন আপনার স্ত্রী এমন কোনো চাকরি করেন না যে তাতে তার মাসিক একটা আয় হয়।
কিন্তু প্রত্যেকটা মানুষের একটা হাত খরচ আছে - আপনার স্ত্রীর যা দরকার - তার সব কিনে দিলেও আছে।

হতে পারে তার রাস্তা থেকে আচার কিনে খেতে ইচ্ছা করছে। অথবা একটা ফকিরকে দশটা টাকা দান করতে ইচ্ছে হচ্ছে।
এ জন্য তো সে আর আপনাকে বলতে পারে না, 'দশটা টাকা দিও।'
চাওয়া ব্যাপারটার মধ্যেই আত্মসম্মানহানীর আবেশ আছে। আর প্রতিনিয়ত চাওয়া তো আরো গ্লানিকর।

একটা মেয়ে - যে অনেক পড়াশোনা করার পরেও আপনাদের সংসার দেখার দায়িত্ব নিয়েছে, সন্তানদের প্রতিপালনের কাজ করছে - তার কাছে মনে হতেই পারে; যদি সে এগুলো না করে চাকরি করত তাহলে আপনার কাছে ছোট হতে হতো না।
ভাইয়েরা, সামর্থ্য অনুযায়ী আপনার ঘরে থাকা স্ত্রীকে প্রতিমাসে কিছু টাকা হাত খরচের জন্য দেন।
যদি আপনার মা, বোন আপনার ওপর নির্ভরশীল হয়, তাদেরকেও দেন।
সম্মান করে দেন। এমনভাবে দেবেন না যে তাকে অনুগ্রহ করছেন।
খাওয়া-পরা-তেল-সাবান ইত্যাদি নিত্য ব্যবহার্য জিনিস আর সম্মান এক নয়।

আপনি আপনার স্ত্রীকে সম্মান করলে তিনিও আপনাকে সম্মান করবেন। আপনার সংসার সুখের হবে।

* Sharif Abu Hayat Opu

 

Facebook fan page