skip to main |
skip to sidebar
বাংলা হাদিসঃ পর্ব (১)
আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে চান? :
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি
বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ
সেই বান্দার প্রতি সন্তুষ্ট হন, যে
বান্দা কিছু খেলে আল্লাহর প্রশংসা
করে এবং কিছু পান করলেও আল্লাহর প্রশংসা করে (অর্থাৎ আলহামদুলিল্লাহ
পড়ে)।” [মুসলিম
২৭৩৪]
আবু মাসউদ
বদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি
বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “তোমাদের
পূর্ববর্তী লোকদের মধ্যে একটি লোকের হিসাব নেওয়া হয়েছিল। তার একটি
মাত্র সৎকর্ম ব্যতিরেকে আর কোন ভাল কাজ পাওয়া যায়নি। সেটি
হল এই যে, সে লোক সমাজে মিলেমিশে থাকতো। সে
ছিল স্বচ্ছল (বিত্তশালী) ব্যক্তি। নিজ চাকরদেরকে
গরীব ঋণগ্রস্তদের ঋণ মউকুফ করার নির্দেশ দিত। (এসব
দেখে) আল্লাহ আযযা
ওয়াজাল্ল বললেন, ‘আমি তো ওর চাইতে বেশী ক্ষমা প্রদানের
অধিকারী। (হে ফেরেশতাবর্গ!)
তোমরা ওকে মাফ করে দাও।” [বুখারী ২৩৯১, মুসলিম
১৫৬১]
আবু মুসা
আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ
(সাঃ) বলেন, “যখন কোন বান্দার সন্তান
মারা যায়, তখন মহান আল্লাহ স্বীয় ফেরেশতাদেরকে
ডেকে বলেন,
‘তোমরা আমার বান্দার সন্তানের জীবন হনন
করেছ কি?’ তারা বলেন, ‘হ্যাঁ।’ তিনি
বলেন,
‘তোমরা তার হৃদয়ের ফলকে হনন করেছ কি?’ তারা
বলেন,'হ্যাঁ।’ তিনি
বলেন,
‘সে সময় আমার বান্দা কি বলেছে?’ তারা
বলে, ‘সে আপনার হামদ (প্রশংসা) করেছে
ও ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রা-জিউন (অর্থাৎ আমরা তোমার জন্য এবং
তোমার কাছেই অবশ্যই ফিরে যাবো) পাঠ করেছে।’ মহান
আল্লাহ বলেন,
‘আমার (সন্তানহারা) বান্দার জন্য জান্নাতের
মধ্যে একটি গৃহ নির্মাণ কর, আর তার
নাম রাখো, ‘বায়তুল হামদ’ (প্রশংসা
ভবন)।” [তিরমিযী
১০২১]
আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত । তিনি
বলেছেন একজন ইয়াহুদ মহিলা তাঁর নিকট আগমন করে (কথা
প্রসঙ্গে ) কবরের আযাবের কথা উল্লেখ করলো । সে বলল, আল্লাহ
আপনাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করুন । পরে
আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামকে কবরের আযাব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন , হাঁ কবরের
আযাব সত্য ।আয়েশা
বলেছেন, এরপর আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে
এমন কোনও সালাত আদায় করতে দেখি নাই, যাতে
তিনি কবরের আযাব থেকে (আল্লাহর
নিকট ) আশ্রয় প্রার্থনা করেন নাই।
[সহীহ আল-বুখারী ঃ কিতাবুল জানায়েয
/১২৮১]
আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত । তিনি
বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম দো'আ
করতেন , হে আল্লাহ আমি কবরের আযাব থেকে, দোযখের
আযাব থেকে,জীবন
ও মৃত্যুকালীন ফেতনা থেকে এবং মসীহে দাজ্জালের ফেতনা থেকে
তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
[সহীহ আল-বুখারী ঃ কিতাবুল জানায়েয
/১২৮৬]
আবু’ন-নু’মান (রাঃ)...
আবূ বুরদা (রাঃ)-র পিতা [আবূ মূসা (রাঃ)] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ
একবার আমি নবী (সাঃ) –এর
কাছে এলাম। তখন
তাঁকে দেখলাম তিনি মিসওয়াক করছেন
এবং মিসওয়াক দিয়ে তিনি উ’, উ’ শব্দ
করছেন যেন তিনি বমি করছেন। (বুখারী ১ম খণ্ড, ২৪৩)
উসমান ইবন আবূ শায়বা (রাঃ).... হুযায়ফা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত ,তিনি বলেন, নবী
(সাঃ) যখন রাতে (সালাতের জন্য) উঠতেন তখন তিনি মিসওয়াক
দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতেন। (বুখারী ১ম খণ্ড, ২৪৪)
আবু হুরাইরা
(রাঃ) হতে বর্ণিত । নবী (সাঃ)
বলেছেন আল্লাহ তা'য়ালা (বান্দাদের) হাঁচি
দেয়া পছন্দ করেন এবং হাই তোলা
অপছন্দ করেন . কোনো ব্যক্তি হাঁচি দিয়ে
'আলহামদুলিল্লাহ' বললে
যে সকল মুসলিমরা তা শুনবেন, তাদের
প্রত্যেকের কর্তব্য 'ইয়ারহামুকাল্লাহ' বলে
তার জবাব দেয়া . আর হাই তোলা শয়তানের তরফ থেকে
আসে . সুতরাং যথাসাধ্য তা রোধ করা উচিত .যখন কোনো লোক ( হাই তোলার সময় মুখ
ব্যাদান করে খুলে) 'হা' করার
আওয়াজ কর , তখন তার প্রতি শয়তান (বিদ্রূপ করে)
হাসে.
[সহীহ আল-বুখারী ঃ ৫ম খন্ড /৫৭৮২ ]
আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সূরা নাস
ও সূরা ফালাক পড়ে) তাঁর কোন কোন বিবির ব্যাথার স্থানে আপন ডান হাত খানা বুলিয়ে
দিতেন এবং দো'আ পড়তেন:
"আল্লাহুম্মা রাব্বান নাছ, আযহিবিল
বা'ছ , ওয়াশফিহী
, আন্তাশ শাফী, লা
শিফায়া ইল্লা শিফাউকা, শিফায়ান
লা ইউগা দিরু ছাক্বামান ।"
অর্থঃ "হে আল্লাহ, সব
মানুষের পারোয়ারদিগার, ব্যথা
দূর করে দাও। তাঁকে শেফা
দান করো। তুমিই
শেফাদানকারী । তোমার শেফা ভিন্ন আর কোন শেফা নেই। এমন শেফা
দান করো , যা কোনও রোগকেই বাদ দেয় না ।"
[সহীহ আল-বুখারী ঃ ৫ম খন্ড /৫৩২৩]
রাত
জাগার অপকারিতা :
রাত জাগার ফলে সুন্নতের বিরোধিতা হয়। নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এশার পূর্বে ঘুম ও এশার পর কথোপকথন অপছন্দ করতেন। আবু
বারযাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:“রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এশার পূর্বে ঘুম ও পরে কথাবার্তা অপছন্দ করতেন”।
বুখারি: (৫৩৭), মুসলিম:
(১০৩২)
ইয়াহইয়া ইবন
সুলায়মান (রাঃ)... সালিমের পিতা (আব্দুল্লাহ ইবন উমর) থেকে বর্ণিত, তিনি
বলেনঃ জিবরাঈল (আঃ) (একবার) নবী (সাঃ) – এর
নিকট (আগমনের) ওয়াদা করেন। কিন্ত তিনি আসতে দেরী করেন। এতে
নবী (সাঃ)-এর খুবই কষ্ট হচ্ছিল। এরপর নবী (সাঃ)
বের হয়ে পড়লেন। তখন জিবরাঈল (আঃ)-এর সাথে তাঁর সাক্ষাত হল। তিনি
যে মানসিক কষ্ট পেয়েছিলেন সে বিষয়ে তাঁর
কাছে বর্ণনা করলেন। তখন জিবরাঈল (আঃ) বললেনঃ
যে ঘরে ছবি বা কুকুর থাকে সে ঘরে আমরা কখনও প্রবেশ করি না। (বুখারী
৯ম খণ্ড, ৫৫৩৫)
আব্দুল্লাহ ইবন মাসলামা (রাঃ).. নবী সহধর্মিণী আয়েশা (রাঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন যে, (একবার) তিনি ছবিযুক্ত গদি খরিদ করেন । রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) (বাহির থেকে এসে) যখন তা দেখতে পেলেন, তখন
দরজার উপর দাড়িয়ে গেলেন। (ভিতরে)
প্রবেশ করলেন না। আয়েশা
(রাঃ) নবী (সাঃ)-এর চেহারায় অসন্তোষটির ভাব বুঝতে
পারলেন। তখন তিনি বললেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নিকট এগুনাহ
থেকে তওবা করছি? নবী (সাঃ) বললেনঃ এ গদি কোত্থেকে? আয়েশা
(রাঃ) বললেনঃ আপনার বসার ও হেলান দেওয়ার জন্য
আমি এটি খরিদ করেছি। রাসূলুল্লাহ (সাঃ)
তখন বললেনঃ এসব ছবি নির্মাতাদের কিয়ামতের দিন আযাব দেওয়া হবে এবং
তাদেরকে বলা হবে, তোমরা
যা বানিয়েছিলে তা জীবিত করো। তিনি আরও বললেন, যে
ঘরে (প্রানীর) ছবি থাকে, সে
ঘরে (রহমতের) ফেরেশতা প্রবেশ করে না। (বুখারী
৯ম খণ্ড, ৫৫৩৬)
মা-বাবার
পক্ষ থেকে হজ্জ বা উমরাহ করা :
ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,‘‘জুহাইনা গোত্রের
একজন মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আগমণ
করে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমার
মা হজ্জ করার মানত করেছিলেন কিন্তু তিনি
হজ্জ সম্পাদন না করেই মারা গেছেন। এখন আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ্জ আদায় করতে
পারি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তুমি তোমার
মায়ের পক্ষ থেকে হজ্জ কর। তোমার কি ধারণা যদি তোমার মার উপর ঋণ থাকতো তবে
কি তুমি তা পরিশোধ করতে না ? সুতরাং
আল্লাহর জন্য তা আদায় কর। কেননা আল্লাহর
দাবী পরিশোধ করার অধিক উপযোগী’’ [সহীহ
বুখারী: ১৮৫২]।
তবে মা-বাবার পক্ষ থেকে যে লোক হজ্জ বা ওমরাহ করতে চায় তার
জন্য শর্ত হলো সে আগে নিজের হজ্জ-ওমরাহ করতে হবে।
রাতের
সালাত গুনাহের কাফ্ফারা ও পাপ মোচনকারী :
রাতের সালাত গুনাহের কাফ্ফারা ও পাপ মোচনকারী। আবু
উমামা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন:“তোমরা রাতের সালাত আঁকড়ে
ধর, কারণ এটা তোমাদের পূর্বের নেককার লোকদের
অভ্যাস এবং তোমাদের রবের নৈকট্য
দানকারী, গুনাহের কাফ্ফারা ও পাপ মোচনকারী”।
[তিরমিযি : (৩৫৪৯), হাকেম:
(১/৩০৮)]
'আল্লাহ ছাড়া
ইবাদতের যোগ্য কোন মা‘বুদ
নেই। তিনি
এক তাঁর কোন শরিক নেই। রাজত্ব তাঁরই
এবং প্রশংসা মাত্রই তাঁর। তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। হে
আল্লাহ! তুমি যা প্রদান কর তা বাধা দেয়ার কেহই
নেই, আর তুমি যা দেবে না তা দেয়ার মত
কেহ নেই। তোমার
গজব হতে কোন বিত্তশালী বা পদমর্যাদার অধিকারীকে তার ধন-সম্পদ
বা পদমর্যাদা রক্ষা করতে পারে না।'
[বোখারি : ৭৯৯]
বৃষ্টির সময় আল্লাহর কাছে বেশী বেশী দুয়া করুন :
আল্লাহুম্মা সায়্যিবান নাফিয়ান
"আল্লাহ, এই
মেঘ থেকে কল্যাণকারী বৃষ্টি দান কর."
সাহল ইবনে সাদ (রা) বর্ননা করেন। রাসূল
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, "দুই
সময়ের দোয়া কখনও প্রত্যাখ্যাত হয় না, আযান
শেষের পর এবং বৃষ্টির
সময়।"
[হাকেম, ২/১১৪
আবূ দাঊদ, ২৫৪০]
আব্দুল্লাহ ইবনে
আমর ইবনে আস (রাঃ) কর্তক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) বলেছেন, ‘‘পবিত্র কুরআন
পাঠক, হাফেয ও তার উপর আমলকারীকে ( কিয়ামতের
দিন) বলা হবে, ‘তুমি কুরআন
কারীম পড়তে থাকো ও চড়তে থাকো। আর ঠিক সেইভাবে স্পষ্ট ও ধীরে ধীরে পড়তে
থাকো, যেভাবে দুনিয়াতে পড়তে। কেননা
, (জান্নাতের ভিতর) তোমার স্থান ঠিক
সেখানে হবে, যেখানে তোমার শেষ আয়াতটি খতম হবে।”
(আবূ দাউদ ১৮৬৮, তিরমীযি
২৯১৪ হাসান)
পাপসমূহকে নিশ্চিহ্ন করার উপায় :
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) বলেন, “আমি কি তোমাদেরকে
এমন কাজ বলে দেব না, যা দ্বারা আল্লাহ তাআলা পাপসমূহকে
নিশ্চিহ্ন করে দেন এবং মর্যাদা বর্ধন করেন?” সাহাবাগন
বললেন, ‘অবশ্যই বলুন, হে আল্লহর
রসূল ! তিনই বললেন “ কষ্টের সময় পূর্ণরূপে ওযু করা, মসজিদের
দিকে বেশি বেশি পদক্ষেপ করা ( অর্থাৎ দূর
থেকে আসা) এবং এক সালাতের পর দ্বিতীয় সালাতের
অপেক্ষা করা। সুতরাং এই হল (নেকী ও সওয়াব) সীমান্ত পাহারা দেওয়ার মত।”
(মুসলিম ২৫১, তিরমীযি ৫২)
0 comments:
Post a Comment