Monday, July 9, 2012

বাংলা হাদিসঃ পর্ব (২)

সুবহানাল্লাহ ! আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর সৃষ্টির প্রতিটি প্রাণীর রিযিকের ব্যবস্থা করে রেখেছেন !:
উমার বিন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনরাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তোমরা যদি যথার্থই আল্লাহর উপর নির্ভরশীল হতে, তবে পাখীদের যেভাবে রিযিক দেয়া হয় সেভাবে রিযিক দেয়া হতএরা সকালে খালি পেটে বের হয় এবং সন্ধ্যায় ভরা পেটে ফিরে আসে” [তিরমিযী: ২৩৪৪, হাসান]
আব্দল্লাহ ইবনে মাসাউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব ( কুরআন মাজীদ) এর একটি বর্ণ পাঠ করবে ,তার একটি নেকী হবেআর একটি নেকি দশটি নেকীর সমান হয়আমি বলছি না যে, ‘আলিফ-লাম-মীমএকটি বর্ণ ; বরং আলিফ একটি বর্ণ, লাম একটি বর্ণ, মীম একটি বর্ণ ’’ (অর্থাৎ, তিনটি বর্ণ দ্বারা গঠিত আলিফ-লাম-মীম’, যার নেকীর সংখ্যা হবে তিরিশ।)
(
তিরমিযী ২৯১০, হাসান)
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওযু করল, অতঃপর জুম্মা পড়তে এল এবং মনোযোগ সহকারে খুতবাহ শুনল, সে ব্যক্তির এই জুম্মা ও (আগামী) জুম্মার মধ্যেকার এবং অতিরিক্ত আরো তিন দিনের (ছোট) পাপসমূহ মাফ করে দেয়া হলআর যে ব্যক্তি (খুতবাহ চলাকালীন সময়ে) কাঁকর স্পর্শ করল, সে অনর্থক কর্ম করল” ( অর্থাৎ, সে জুম্মার সওয়াব বরবাদ করে দিল)। (মুসলিম ৫৮৭, আবূ দাউদ ১০৫০,ইবনু মাজাহ ১০১০)
পুরুষের স্বর্ণ ব্যবহার আগুনের সমতুল্য : 

ইবনে আব্বাস রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক লোকের হাতে স্বর্ণের একটি আংটি দেখেন এবং আংটিটি তিনি তার হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ফেলে দিলেন এবং বললেন, তোমাদের কেউ কেউ এমন আছে, সে আগুনের টুকরা গ্রহণ করে এবং তা তার হাতে পরিধান করেরাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলে যাওয়ার পর লোকটিকে বলা হল, তুমি তোমার আংটিটি কুড়িয়ে নাও এবং আবার ব্যবহার করলোকটি বলল, না! আল্লাহর কসম করে বলছি, যে জিনিষটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার হাত থেকে নিয়ে ফেলে দিয়েছেন, তা আমি আর কখনোই তুলে নেবো না
[
মুসলিম: ২০২১]
জান্নাতে যাওয়ার অন্যতম উপায় রাতের সালাত :

আব্দুল্লাহ ইব্‌ন সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করেন, তখন লোকেরা তার দিকে ছুটে গেলআর চারদিকে ধ্বনিত হল: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগমন করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগমন করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগমন করেছেন তিনবার আমি মানুষের সাথে তাকে দেখতে আসলামআমি যখন তার চেহারা ভালভাবে দেখলাম, পরিষ্কার বুঝলাম তার চেহারা কোন মিথ্যাবাদীর চেহারা নয়আমি সর্বপ্রথম তাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন: হে লোকেরা, তোমরা সালামের প্রসার কর, খাদ্য দান কর, আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখ ও রাতে সালাত আদায় কর যখন মানুষের ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করবে
(
ইব্‌ন মাজাহ: (৩২৫১), ও (১৩৩৪), তিরমিযি: (২৪৮৫) )
 ইলম অর্জনের জন্য হিজরত করা এবং তার ফজিলত :

মদীনা থেকে এক ব্যক্তি দামেশকে আবূ দারদা রাদিআল্লাহু আনহুর কাছে এলো তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে ভাই, কোন জিনিস এখানে তোমার আগমন ঘটিয়েছে?

তিনি বললেন : একটি হাদীস এখানে আমাকে এনেছে, যা আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন বলে আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে

তিনি জানতে চাইলেন : তুমি কি অন্য কোনো প্রয়োজনে আসো নি ?! তিনি বললেন, না

জানতে চাইলেন : তুমি কি বাণিজ্যের জন্যে আসো নি?! উত্তর দিলেন, জী না

তিনি জানালেন, আমি কেবল এ হাদীস শিখতেই আপনার কাছে এসেছি

তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইলম হাসিলের উদ্দেশ্যে কোনো পথ অবলম্বন করে আল্লাহ তার জান্নাতের পথ সহজ করে দেনআর তালিবুল ইলমকে খুশি করতে ফেরেশতারা তাঁদের ডানা বিছিয়ে দেনআলেমের জন্য আসমান ও যমীনের সবাই মাগফিরাত কামনা করতে থাকেএমনকি পানির মাছগুলো পর্যন্তআর আবেদের ওপর আলেমের শ্রেষ্ঠত্ব সকল তারকার ওপর চাঁদের শ্রেষ্ঠত্বের মতোনিশ্চয় আলেমগণ নবীদের উত্তরাধিকারীতবে নবীগণ দিনার বা দিরহামের উত্তরাধিকারী বানান না তাঁরা কেবল ইলমের ওয়ারিশ বানানঅতএব যে তা গ্রহণ করে সে পূর্ণ অংশই পায়’ [তিরমিযী : ২৬৮২]
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যারা আল্লাহ্‌র যিক্‌র করতে বসে (অর্থাৎ কুরআন হাদীসের আলোচনা করে, তা শিখে ও শিখায়তাসবীহ-তাহলীল, দো দুরূদ ও ইসতেগফার করেআর এগুলো করে নবীজীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তরীকায়) ফেরেশতারা তাদের চারপাশে এসে জড় হয়, আল্লাহর রহমত দ্বারা তাদের ঢেকে রাখে, তাদের উপর প্রশান্তি নাযিল হয় এবং আল্লাহ্ (এতে খুশী হয়ে) তাঁর নিকটস্থ (ফেরেশতাদের) কাছে ঐ সব যিক্‌রকারী বান্দাদের সম্পর্কে (প্রশংসামূলক) আলোচনা করেন’ [বুখারী : ৫৬৪২]

0 comments:

Post a Comment

 

Facebook fan page